সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Pallabi Ghosh | ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৪ : ৩২Pallabi Ghosh
পল্লবী ঘোষ, কৃষ্ণনগর: সংসদ থেকে বহিষ্কারের পরেও থেমে থাকেনি কেন্দ্রের সরকার। ভোটের সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে হেনস্থা করছে। আসলে মহুয়া মৈত্র সরব হলে, মোদি-শাহের সরকারের উপর চাপ বাড়বে। কৃষ্ণনগরের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই বার্তাই দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি।
রবিবার দুপুরে চব্বিশের ভোট প্রচারের ময়দানে প্রথমবার মমতা। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ কৃষ্ণনগরের মাটিতে পা রাখেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ইন্দ্রনীল সেন। ৫০ মিনিটের বক্তব্যে কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে বারংবার সোচ্চার হন মমতা। তীব্র তাপের মধ্যে যাঁরা প্রচার সভায় উপস্থিত ছিলেন, সকলকে প্রণাম জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। মমতা বলেন, "আপনারা জেতানোর পরেও মহুয়াকে সংসদ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। মহুয়া এর যোগ্য জবাব দেবে। জেতার পর মহুয়া আবার রুখে দাঁড়াবে।"
কৃষ্ণনগরের সভায় "মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে" লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে আবারও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মতুয়াদের সতর্ক করেন মমতা। তাঁর দাবি, "বিজেপি কৃষকদের জন্য, মুসলমানদের জন্য, বেকারদের, মতুয়াদের জন্য কিচ্ছু করেনি। মতুয়ারা যাঁরা এত উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছেন, তাঁরা মাথায় রাখবেন কেন্দ্রের সরকারই অত্যাচার করে। বাংলার সরকার করে না। ১২ বছর তো দেখলেন। মতুয়াদের বলছি, আগের লোকসভা, বিধানসভায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। এবার সেই ভুল করবেন না। মতুয়াদের হয়ে প্রথম থেকেই আমি লড়েছি। সিএএ-র জন্য দরখাস্ত করলেই বাংলাদেশী হিসেবে চিহ্নিত করবে। দরখাস্ত করলেই ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখবে। আপনারা দরখাস্ত করার আগে, বিজেপির সকলকে আগে আবেদন করতে বলুন।" এরপর আরও সংযোজন, "মনে রাখবেন ভাই-বোনেরা, ক্যা যদি মাথা হয়, এনআরসি তাহলে ল্যাজা। আমরা ক্যা করতে দেব না। নতুন করে কাউকে উদ্বাস্তু হতে দেব না।"
আজকের সভায় দাঁড়িয়ে মহুয়া মৈত্রের প্রতিপক্ষ বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে বিঁধে মমতা বলেন, "প্রার্থীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথন বাজারে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পেগাসাসের আর দরকার নেই। মোদি বাবু তো ইতিহাস ভুলে গেছেন। নাম নেব না, তবে আপনাকে বলছি, "রাজমাতা" হলে মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না। ভুয়ো প্রচার করলে, আমরাও ইতিহাসের সাহায্য নেব। নিলে কিন্তু মুখ লুকনোর জায়গা থাকবে না। প্রার্থীকে ফোনে বলেছেন, ইডির ৩ হাজার কোটি টাকা গরিবদের ফিরিয়ে দেবেন। ইডির উদ্ধার করা টাকা ফেরত দিলে একটা লোক ২১ টাকা করেও পাবেন না। তাই বলছি, ভিক্ষে চাইবেন না।"
ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও, বাংলায় একা লড়াইয়ের বার্তা আগেই দিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। এই সভা থেকে ফের জোট-বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। মমতার কথায়, "ইন্ডিয়া জোট আমি তৈরি করেছি। নামকরণ আমার করা। অথচ আমার বিরুদ্ধেই বাম-কংগ্রেস লড়ছে। কেরলে তো সিপিএম আর কংগ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু বাংলায় কেন জোট বাঁধছে বাম-কংগ্রেস! ওদের পাশে থাকবেন না।"
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ৪০০-র উপর সিটে জেতার লক্ষ্য মোদি সরকারের। মমতার বক্তব্য, "এত কনফিডেন্স থাকলে বাংলায় এত বদলি হচ্ছে কেন? এর আগে ২০০ টার্গেট ছিল ওদের। আমাদের এখানে ৭৫-টা পেয়েছিল। সেখান থেকে আবার ১৫টায় চলে এসেছে। এবারেও বাংলায় গো হারা হারবে, কথা দিলাম।"
শেষলগ্নে মমতা বলেন, "বাংলা ভাল থাকে, দেশ ভাল থাকে সেই প্রার্থনা করবেন সকলে। দেশ আজ ভাল নেই। দলিতদের উপর, মুসলিমদের উপর অত্যাচারের রাজ চলছে। বাংলার প্রাণকেন্দ্র থেকে তৃণমূলকে তাড়ানোর চেষ্টা করছে! আপনারা দেশ থেকে, বাংলা থেকে বিজেপিকে দূর করুন। বিলকিস বানো, হাথরাস, গুজরাটের দাঙ্গার ঘটনা মনে রাখবেন। বিজেপি দাঙ্গাবাজদের দল। আপনারা দাঙ্গায় জড়াবেন না। আমরা একা চলছি, আমরা একাই বিজেপিকে তাড়াব।"